যশোরের যশ হচ্ছে খেজুরের রস। এখন সময় হচ্ছে ভরা মৌসুম এর। রস সংগ্রহ করা ও তা থেকে গুড়-পাটালি প্রস্তুতের কাজ করছে সবাই পুরোদমে। যশোরের খেজুরের গুড় খুব বিখ্যাত নাম করা। একটা সময় খেজুরের গুড় থেকে আমরা চিনিও প্রস্তুত করতাম। এই গুড় সাত সমুদ্র তের নদী পার করে চলে যায় সুদূর বিলেত পর্যন্ত।

প্রতি বছরের জন্য ন্যায় হচ্ছে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ অঞ্চল থেকে খেজুর গুড় এর জন্য ছিল খুব বিখ্যাত। এই অঞ্চলের এখন সেই খেজুরের গুড় এখন প্লাস্টিকের ড্রামভর্তি করে চলে যাচ্ছে দেশ-বিদেশে নানান জাইগাই। শীতের সময় দেশের বিভিন্ন জাইগা থেকে ব্যাপারীরা ছুটে আসে এই বাজারে গুড় নেওয়ার কারণে। তারা তাদের স্থানীয় কিছু বাজার ঘুরে ঘুরে হাজার হাজার ঠিলে গুড় কিনে। সেগুলোকে ড্রামে করে নিয়ে যায় তার নিজ এলাকায়।সেই একই প্রক্রিয়ায় এই উপজেলা থেকে গুড় যাচ্ছে বিদেশেও।
এখানে প্রতি সপ্তাহে দুদিন রাজগঞ্জ বাজারের গুড় এর হাট বসেন।
এ হাটে অনেকে গুড় বেচাকেনা করতে আসে বিকালের মধ্যে এখান কার গুড় শেষ হয়ে যায়। এমনকি অনেকে গুড়ের বাজার ধরার জন্য কিছু ব্যাপারীরা হাটের আগের দিন এসে পুরো এলাকায় জড়ো হয়ে যায়। দেখতে দেখতে হাজির হয়ে যায় পাইকারি ব্যাপারীর কিছু দল আসে। প্রতিটি তরল গুড় হোল ১ হাজার ৫শ থেকে ১ হাজার ৬শ টাকা এবং শুকনো গুড়ের বড় গুলা হোল ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন। কিন্তু এখন বর্তমানে দাম কিছুটা কম হয়ে আছে।
সোমবার রাজগঞ্জ হাটে গিয়ে দেখি, প্রতি ভাঁড় গুড়ের দাম হচ্ছে ১ হাজার ৪শ থেকে ১ হাজার ৫শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। ব্যাপারীরা কম দামে গুড়ের ভাঁড় কিনে সারিবদ্ধভাবে সব সাজিয়ে রাখে। কেনাবেচা শেষে হয়ে গেলে ব্যাপারীরা সব ভাঁড় গুলো থেকে গুড় ঢেলে ড্রাম ভর্তি করেন তারপর অনায়াসে নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জাইগা।
তারপর এসব গুড় আমাদের দেশের চাহিদা পূরণ করার পরে বিদেশেও পাঠানো হয় কিছু। পথিমধ্যে যখন রাস্তা ভাঙাচুর হয়ে থাকে তখন ঝাঁকুনিতে গুড়ের ভাঁড় ভেঙে সব নষ্ট হয়ে যায়। তাই এখন সবাই গুড় নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা প্লাস্টিকের ড্রাম ব্যবহার করে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ড্রামে করে কোন চিন্তা ছাড়া নিশ্চিন্তে পিকআপ করে কিংবা ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন জাইগাই চলে যায় রাজগেঞ্জের ভাড়ের সেই বিখ্যাত গুড়।