বগুড়ার দই এর ইতিহাস।
বগুড়ার দই আর বগুড়া যেনো এক সুত্রে গাঁথা। কেউ কেউ বলে বগুড়া দইয়ের রাজধানী। প্রায় আড়াইশো বছরের ইতিহাসই বগুড়ার দইয়ের। সারা বাংলাদেশে দই তৈরি হলেও বগুড়ার দই বিখ্যাত কিছু বিশেষ কারনে। শুধু কি বাংলাদেশ নয়! সুদুর বৃট্রেনের রানী থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পরে এই দইয়ের সুখ্যাতি। ১৯৩৮ সালে সর্ব প্রথম ইংল্যান্ডের লন্ডনে ছড়িয়ে পরে বগুড়ার দইয়ের সুখ্যাতি।

শেরপুরের ঘোষ পরিবারই দই তৈরি করে সারা বগুড়াকে পরিচিতি লাভ করায়।
জানা যায়,প্রায় ২৫০ বছর আগে দইয়ের প্রচলন শুরু হয় বগুড়া জেলার শেরপুর থেকে । স্থানীয় এলাকাবাসীর মতে শেরপুরের ঘোষ পরিবারই দই তৈরি করে সারা বিশ্বে বগুড়াকে পরিচিতি লাভ করায়।ঘোষ পরিবারের ঘেটু ঘোষ সর্ব প্রথম দই তৈরি আরম্ভ করেন। বংশগত ভাবে টক দই তৈরি করলেও কালের বিবর্তনে স্বাদের বৈচিত্র্যের কারণে পরবর্তিতে তা মিষ্টি দইয়ে রূপান্তরিত হয়। টক দই দিয়ে বিভিন্ন রকম রান্না ও ঘোল তৈরি করা হলেও অতিথি আপ্যায়নে মিষ্টি দইয়ের ছাড়া চলে না।
প্রথমে ঘোষ পরিবার অতি গোপনে বানানোর চেষ্টা করত যাতে কেউ যেনো না তৈরি করতে পারে কিন্তু অতি গোপনীয়তার সাথে তৈরি করলেও গোপনীয়তা ধরে রাখতে পারেনি বেশিদিন। এখন বগুড়ার শেরপুরসহ জেলার নানা জায়গায় তৈরি হয় এই দই। তবে শেরপুর ও সোনাতলার নামাজখালীর দই সবচেয়ে বেশি প্রসিদ্ধ। দই দুধ, চিনি ও মাটির কাপ বা সরা দরকার হয়। একটি বড় ধরনের পাত্রে প্রায় ছয় ঘণ্টা দুধ ও চিনি জ্বাল দেওয়ার পরে যখন লালচে বর্ণ ধারণ করে তখন তা মাটির সরা বা কাপে সারারাত ঢেকে রাখার পর সকালে দই প্রস্তুত হয় এবং খাওয়ার উপযোগী হয়। প্রায় ১৬ মণ দুধে ৪৫০টি সরা দই বানানো সম্ভব বলে জানান দই কারিগরেরা।
বাংলাদেশের প্রায় সব জেলায় দই তৈরি হলেও কিছু বিশেষত্বের কারণে এখনও বগুড়ার দইয়ের সুখ্যাতি আছে দেশ ও বিশ্ব জুড়ে ।মূল্য পাত্রভেদে ১৮০ টাকা এবং সবচেয়ে বড় সরা ১ কেজির দাম ২২০ টাকা।
বাংলাদেশের প্রায় সব জেলায় দই তৈরি হলেও কিছু বিশেষত্বের কারণে বগুড়ার দইয়ের সুখ্যাতি সারাদেশ জুড়ে। উৎপাদন ব্যবস্থার প্রতিটি পর্যায়ে কারিগরদের বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণের পাশাপাশি মান নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে তারা যত্নবান হওয়ায় বগুড়ার দই স্বাদে-গুণে তুলনীয়।
আরও জানুন বগুড়ার দই হালায় আবার জিগায়।